আসলে এ সবটাই ঘটেছে মিম স্রষ্টাদের কল্পনায়। ‘সা রে গা মা পা’ খ্যাত নোবেলের পোস্ট করা একটি ছবিতে তাঁর এক সঙ্গিনীর মুখের বদলে প্রযুক্তির মাধ্যমে বসিয়ে দেওয়া হয়ে গিয়ে ছিল জবার মুখ। জবা অর্থাৎ সেলিব্রিটি জলসার ‘কে আপন কে পর’ ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র। জবাকে নিয়ে এই ঠাট্টা-তামাশা নিউ নয়। চার বছর চলার পর ধারাবাহিকটি শেষ হয়। অথচ তা নিয়ে ট্রোল-মিমের পর্ব এখনও অব্যাহত।
ধারাবাহিকে এক সম্ভ্রান্ত ফেমেলির কাজের ভদ্র মহিলা হিসেবে জবার যাত্রা শুরু হয়েছিল। আবার সেই পরিবারের ছেলেকে বিয়ে করে রাতারাতি পড়াশোনা শিখে নিমেষে হয় সে! কী ভাবছেন? জবার কেরামতি এখানেই শেষ?
একেবারেই না। চরম বিপদের টাইম মাথা ঠান্ডা রেখে শুধুমাত্র ১টি কাঁচির সাহায্যে বোম নিষ্ক্রিয় করে ফেলে জবা সেনগুপ্ত! নেটাগরিকদের প্রশ্ন, ডিসি-মার্ভেলের সুপারহিরোদের থেকে কি কোনও ভাগে কম আশা করা যায় তাকে? রাতারাতি মিম স্রষ্টাদের প্রিয় বিষয়ের লিস্টে উঠে আসে জবার নাম!
কয়েক মাসের মধ্যেই ‘সুপারহিরো’ হতে ‘অ্যামিবা’-য় রূপান্তর ঘটে জবার। জা এবং বরের হাতে বলি হওয়ার পরে গলায় একটা পাতলা ব্যান্ডেজ বেঁধে অনায়াসে ফিরে এসেছিল সে। দুষ্টদের নিদ্রা ছুটিয়েছিল ‘ভূত’ সেজে। অথচ জবার গলার ব্যান্ডেজ নাকি আদৌ ব্যান্ডেজ নয়!
নেটাগরিকদের দাবি, শরীর হতে বাদ পড়া মাথা সেলো টেপ কর্তৃক ব্যাপী ফিরে এসেছিল জবা! ব্যস! এরই সাথে ‘সুপারহিরো’-র সুপার পাওয়ারের লিস্টে জুড়ে গেল অমরত্ব। কেউ কেউ বললেন, “জবা নাকি সেই এককোষী জানোয়ার ‘অ্যামিবা’র মতো, যাকে মেরে ফেলা প্রায় অসম্ভব।”
নেটমাধ্যমে জবা নামান্তরে পল্লবী শর্মাকে নিয়ে অবিরত চর্চা হলেও নিজে ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেন না অভিনেত্রী। তিনি জানিয়েছেন, নেটমাধ্যমে তাঁর নামে যে প্রোফাইলগুলো লক্ষ্য যায়, সে সবই তাঁর অনুরাগীদের তৈরি। নিজেকে নিয়ে ট্রোল, মিম দেখতে প্রতিবেশীদের মুখ চেয়ে থাকতে হয়ে যায় তাঁকে।
পল্লবী বলেন, “আমি আসলে একটু একা থাকতে ভালবাসি। আমাকে নিয়ে যে ট্রোল হয়, তা আমি জানতামই না। অন্যরা এসে আমাকে দেখায়। এই তো কবে দেখলাম আমার সাথে নোবেলের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। এই দিকে নোবেলকে আমি চিনিই না।”
নিজেকে নিয়ে এ ব্যঙ্গ-কৌতুকে যদিও আপত্তি নেই তাঁর। তিনি মনে করেন, ধারাবাহিক সমাপ্ত হওয়ার পরেও ‘জবা’ চরিত্রটির জনপ্রিয়তা কমেনি। এজন্য তাকে নিয়ে মানব এখনও চর্চা করে চলেছে। ধারাবাহিক সম্পন্ন হওয়ার পরেও মজার ট্রোল-মিমের মাধ্যমেই অনুরাগীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন তিনি।
তাঁর কথায়, “ইদানীং ধারাবাহিকে রমণী চরিত্র পর্যাপ্ত বহু মর্যাদা পায়। পর্দাজুড়ে তারাই থাকে বেশি। দর্শকের সঙ্গেও তাই একটা সম্পর্ক তৈরি করে ওঠে। তাদের নিয়ে হাসি-মজা চললে তো কোনও ক্ষতি নেই।”
কিন্তু ধারাবাহিক বলে কি কাহিনির গাভী উদ্ভিদে তোলা যায়? প্রশ্ন ছুড়ে দিতেই হেসে পল্লবীর উত্তর, “ধারাবাহিক তৈরি হয় মানুষকে বিনোদন দেওয়ার জন্য। সে ক্ষেত্রে বাস্তবের সঙ্গে সব কিছুর একতা না খোঁজাই ভাল। ধারাবাহিক অত্যন্ত বহু বাস্তববাদী হয়ে গেলে হয়তো দর্শকেরই সেটি আর ভাল লাগবে না।”
২০১৬ বছরের পর থেকেই জবা ও পল্লবী সমার্থক। ধারাবাহিক সমাপ্ত করে এজন্য টানা অবসর কাটাচ্ছেন অভিনেত্রী। স্টারের সাথে চুক্তিবদ্ধ থাকলেও কোনও কাজ করছেন না এখন। ‘জবা’-র ছাপ দূর ফেলতে পারলেই নিউ কোনও চরিত্র হয়ে উঠতে পারবেন বলা হয় মনে করেন পল্লবী। সূত্র-আনন্দবাজার।